1. mohib.bsl@gmail.com : admin :
  2. info@barisalerkhobor.com : editor :
মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

বরিশালে প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দুই হিন্দু নেতা

  • Update Time : শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিগত সরকারের সময়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করে স্থানীয় এক শীর্ষ নেতার মাধ্যমে দীর্ঘবছর পর্যন্ত যারা সরকারের সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন। এখন তারাই বিএনপির কতিপয় নেতার সাথে আঁতাত করে ভয়ঙ্কর রূপে ফিরেছেন।

ইতোমধ্যে তারা হিন্দু সম্প্রদায়সহ বিগত সরকারের ক্ষমতার আমলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার রোষানলে কোণঠাসা হয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে মেতে উঠেছেন। তাদের অব্যাহত হুমকির মুখে প্রাণভয়ে গত এক মাস ধরে বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দুই হিন্দু নেতাসহ তাদের অনুসারী তিনজন আওয়ামী লীগ কর্মী। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রামের।

শুক্রবার সকালে আত্মগোপনে থাকা নলচিড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের ইউনিয়ন সভাপতি সুশীল করাতী মোবাইল ফোনে অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর পরই তাদের ওপর শুরু হয় জুলুম, অত্যাচার ও নির্যাতন। ওইদিন বিকেলে তার বসত ঘরসহ পাশ্ববর্তী একটি ক্ষুদ্র সেচের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, বাড়ির দলিলপত্রসহ মূল্যবান মালামাল লুটপাট করে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় হামলাকারীরা পরিবারের সদস্যদের কাছে তাকে পেলে হত্যা করার হুমকি প্রদর্শন করেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত ৭ আগস্ট রাতের আধাঁরে পালিয়ে যাওয়ার সময় নলচিড়ার স্টিমারঘাট এলাকায় বসে তাকে বিএনপির কতিপয় যুবক আটক করে সাথে থাকা নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে গত ২৩ আগস্ট তার তিনটি মাছের ঘের থেকে প্রায় চার লাখ টাকার মাছ লুটপাট করে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সর্বশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে তার বাড়ির সামনের দীঘিতে স্থানীয় বিএনপির কর্মীরা প্রকাশ্যে মাছ ধরার সময় থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসার পর দুর্বৃত্তরা সটকে পরলেও পুলিশ চলে যাওয়ার পর তারা পূর্ণরায় মাছ ধরে নিয়ে যায়। সুশীল করাতী আরও বলেন, সন্ত্রাসীদের প্রাণনাশের হুমকির মুখে বিগত এক মাস ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

নলচিড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের ইউনিয়ন শাখার সদস্য মোহন মন্ডল অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগস্ট স্থানীয় বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা আমার কলাবাড়িয়া গ্রামের বাড়িতে প্রকাশ্যে হামলা চালিয়ে বসত ঘর ব্যাপক ভাঙচুরসহ লুটপাট করে। ওইসময় আমাকেও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে প্রানবাঁচাতে গত একমাস ধরে আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

নলচিড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান খলিফা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির কর্মীসমর্থকরা আমার কলাবাড়িয়া গ্রামের বাড়িতে গত ৫ আগস্ট নারকীয় হামলা চালিয়ে বসত ঘর ব্যাপক ভাঙচুরসহ লুটপাট করে। হামলাকারীরা বসত ঘরে রক্ষিত জমিজমার দলিলপত্রও লুট করে নিয়ে যায়। একইসময় আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। তিনি আরও বলেন, একইদিন দুস্কৃতকারীরা স্থানীয় বাজারে আমার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরসহ লুটপাট করে। পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থক শহিদুল ইসলাম হাওলাদার ও স্বজল সরদারের বসত ঘর ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে প্রাণনাশের হুমকির মুখে তিনি নিজ এলাকা ছেড়ে পরিবারসহ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।

তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ভূক্তভোগী সুশীল করাতী, মোহন মন্ডল, মজিবুর রহমান খলিফা, শহিদুল ইসলাম ও স্বজল সরদার বলেন, হামলাকারীরা অধিকাংশই বিগতদিনে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছিলেন। তারা দীর্ঘবছর ধরে সরকারের সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন। ক্ষমতার পালাবদলের পর পরই তারাই বিএনপির কতিপয় নেতার সাথে আঁতাত করে ভয়ঙ্কর রূপে হিন্দু সম্প্রদায়সহ ক্ষমতার আমলে দলের স্থানীয় ওই প্রভাবশালী নেতার রোষানলে কোণঠাসা হয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো তান্ডব চালিয়েছে। পাশাপাশি তাদের দেওয়া প্রাণনাশের হুমকির মুখে দীর্ঘ এক মাস ধরে বাড়ি ঘর ছেড়ে তাদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

সার্বিক বিষয়ে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, উল্লিখিত ঘটনার থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019
Theme Customized By BreakingNews