1. mohib.bsl@gmail.com : admin :
  2. info@barisalerkhobor.com : editor :
শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন

বরিশাল সড়কে বাঁশের সাঁকো, চলাচলে ভোগান্তি

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১ Time View

সিটি করপোরেশন এলাকা হলেও বিভিন্ন জায়গায় হাঁটু সমান পানি থাকায় সড়কের ওপরে সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হয় সাধারণ মানুষকে। আর এ নিয়ে ভোগান্তিতে থাকলেও প্রভাবশালীদের আতঙ্ক ও ভয়ে কেউ সড়ক সংস্কারের কথা বলেন না বরিশাল নগরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সরদার বাড়ি সড়কের বাসিন্দারা।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে পিচ ঢালাইয়ের রাস্তা করে দেওয়ার নামে হ্যারিংবোনের রাস্তার ইট উঠিয়ে ফেলায় এ ভোগান্তিতে পড়েছেন বরিশাল নগরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সরদার বাড়ি সড়কের বাসিন্দারা। শুধু যে সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দারা ভোগান্তিতে এমনটা নয়, ওই সড়কটি ব্যবহার করা পার্শ্ববর্তী বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের মাকরকাঠী ও কটুরাকাঠী এলাকার বাসিন্দারাও ভোগান্তিতে রয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল হাওলাদার বলেন, বরিশাল শহরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝের দোকান এলাকার সরদার বাড়ি থেকে চাপরাসি বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ সিটি করপোরেশনের। এরপর থেকে রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের শুরু। ইউনিয়নের রাস্তাঘাট মাটির হলেও সরদার বাড়ি থেকে চাপরাসি বাড়ির দিক যেতে অনেকটা পথ হ্যারিংবোন করা ছিল। কিন্তু গত ইউনিয়ন নির্বাচনের আগে নতুন রাস্তা করে দেওয়ার নামে সেই হ্যারিংবোনের ইট তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে করে এখন শহর অংশের পাশাপাশি রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের দুই গ্রামের মানুষও ভোগান্তিতে রয়েছেন।

অন্য রাস্তা থাকলেও সরদার বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে চলাচল সহজ হওয়ার কথা জানিয়ে কটুরাকাঠী এলাকার এই বাসিন্দা বলেন, আগে চাপরাসি বাড়ি পর্যন্ত গাড়ি কিংবা পায়ে হেঁটে নিরাপদে যাওয়া যেত কিন্তু এখন বর্ষায় শহর অংশের রাস্তার বিভিন্ন স্থানে হাঁটু সমান পানি জমে থাকে। আর সেই সব জায়গায় স্থানীয়রা সুপারিগাছ ও বাঁশ দিয়ে সাঁকো বানিয়ে পারাপার হচ্ছে। মানুষের সঙ্গে বাজারের ব্যাগ কিংবা কোনো মালামাল বহন করতে গেলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আর শিশুদের তো একা স্কুলে পাঠাতে ভয়ই পায় অভিভাবকরা। যদি পানিতে পরে ডুবে যায় তাহলে কি হবে?

সরদার বাড়ির বাসিন্দা এক তরুণী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বুঝতে হবে কে বেশি প্রভাবশালী। সিটি করপোরেশনের সরদার বাড়ি সড়কের রাস্তার ইট উঠিয়ে পাশের কালিজিরা সড়ক সংস্কারের সময় সেখানে দেওয়ার দৃশ্য দেখেছি কিন্তু কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারিনি। আর ওই সময় রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আহম্মদ শাহরিয়ার বাবু নিজে উপস্থিত ছিলেন। তিনি সিটির কোনো জনপ্রতিনিধি না হলেও বলেছিলেন রাস্তাটি সংস্কার করে পিচ ঢালাই করে দেওয়ার কথা। কিন্তু গত কয়েক বছরে রাস্তাটি সংস্কার তো করা হলই না, মাঝে ইটের রাস্তা হয়ে গেছে মাটির রাস্তা।

তিনি জানান, দুরবস্থা দেখে পাশের এলাকায় একটি হাউজিং প্রকল্পের লোকজন কিছু বালু এ রাস্তায় ফেলেছিল, যদিও তাদের গাড়ির চলাচলের জন্য সেটা করা হয়েছিল। তবে খালের জোয়ারভাটা আর বৃষ্টির পানিতে সেই বালুও ধুয়ে গেছে।
রাস্তা দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, জনপ্রতিনিধিরা অনেক প্রভাবশালী হয়, তাই ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারে না। ভোট দিতে পারলেও, জোড় দিয়ে বলতে পারতাম কোনো কথা, এখন তো তাও পারি না। কিছু বললেই তো সবাই রাগ হয়ে যায়। সবার জন্য চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কথা বলে একা শত্রু হয়ে লাভ কি।

তিনি আরও বলেন, চেয়ারম্যান আহম্মদ শাহরিয়ার বাবু হয়তো মনে করছিল, এমপির সঙ্গে তার ভালো খাতির তাই মেয়রকে দিয়ে সিটির অংশ আর এমপিকে দিয়ে ইউনিয়নের অংশের রাস্তার কাজ করাতে পারবেন। কিন্তু স্বাধীন দেশে তাদের এখন হদিস নেই, তাই জনগণই ভোগান্তিতে রইল।

মাসুদ নামে অপর এক যুবক দাবি করেন, যে করেই হোক রাস্তাটা করার ব্যবস্থা করেন। আর সংস্কার না হলেও পূর্বের জায়গাতে ফিরিয়ে দেন। কারণ শুকনার সময় চলাফেরা করা গেলেও এই বর্ষায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী রাস্তাটি দিয়ে রোগীও নিতে হয় অন্যের কাঁধে তুলে দিয়ে।

এ বিষয়ে রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়ন পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান আহম্মদ শাহরিয়ারকে পাওয়া যায়নি, আর জাতীয় তথ্য বাতায়নে দেওয়া তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করেও সেটিতে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয়রা জানায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর প্রভাবশালী এই জনপ্রতিনিধির দেখা মেলেনি। যেটুকু শোনা গেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তিনি আসামিও হয়েছেন। সবমিলিয়ে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।

এদিকে রাস্তার ইট উঠিয়ে নেওয়া কিংবা ভবিষ্যৎ নির্মাণের বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২৪

Theme Customized By BreakingNews