ভোলার চরফ্যাশনে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির পদ নিয়ে দ্বন্দ্বে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট পারভেজ হোসাইনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।
রোববার বেগম রহিমা ইসলাম কলেজের গভর্নিং বডির সভা চলাকালে এ হামলা করা হয়। হামলার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
অ্যাডভোকেট পারভেজ ওই কলেজের গভর্নিং বড়ির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান।
অপরদিকে ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মাহেদি হাসান জুয়েল জানান, পারভেজ নন, তিনি ওই কলেজের গভর্নিং বডির বৈধ সভাপতি। হামলা হয়েছে কিন্তু কারা করেছে এ বিষয়ে তিনি তেমন কিছু জানেন না।
এ ঘটনায় নিন্দা, ক্ষোভ ও বিচার দাবি করেছেন ওই কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে সন্ধ্যায় চরফ্যাশনের একটি হোটেলের হল রুমে ঘটনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে হামলার বিষয় তুলে ধরেন অ্যাডভোকেট পারভেজ।
একদিন আগে ভোলার বোরহানউদ্দিনের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন ও ব্যক্তিগত অনুদান দেওয়ার সময় হামলার শিকার হন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম ইব্রাহিম খলিল। ওই রেশ না কাটতে ফের চরফ্যাশনে রাজনৈতিক সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।
হামলাকারীরা সবাই ছিলেন এলাকার যুবদল, ছাত্রদল নেতাকর্মী এমন অভিযোগ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জহিরুল ইসলামের।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পারভেজ হোসাইন জানান, গেল বছরের ৫ আগস্টের পর নিয়মতান্ত্রিকভাবে তাকে বেগম রহিমা ইসলাম কলেজসহ ৩টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এদিকে কলেজের কমিটি গঠন বিষয়ে একটি গ্রুপ মেনে নিতে পারেননি।
রোববার অ্যাডভোকেট পারভেজ হোসাইন গভর্নিং বাডির সভা পরিচালনা করছিলেন। সভার শেষদিকে হঠাৎ করে একদল সন্ত্রাসী মিটিং রুমে ঢুকেই প্রথমে গালিগালাজ করতে থাকে। পরে এদের সমর্থনে আরও ৮-১০ জন হামলা চালাতে থাকে।
এ সময় অ্যাডভোকেট পারভেজ ও কামরুজ্জমান শাহীন, কলেজের শিক্ষক, অভিভাবকসহ উপস্থিত ১২ জনকে মারধর করতে থাকে। গলার টাই টেনে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে বলেও জানান অ্যাডভোকেট পারভেজ।
উপস্থিত শশীভূষণ থানার বিএনপির সম্পাদক মোস্তফা কামালসহ কলেজের শিক্ষকরা ছুটে এলে সন্ত্রাসীরা সটকে পড়ে। আহত তিনজনকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান পারভেজ হোসাইন।
পারভেজ জানান, তার কী দোষ ছিল। তিনি তো এই কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হতে চাননি। কলেজের শিক্ষক ও স্থানীয়দের অনুরোধে ও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে নির্বাচিত করা হয়।
কলেজের বর্তমানে চলতি দায়িত্বে থাকা অধ্যক্ষ মো. জহিরুল ইসলাম জানান, ৫ আগস্টের পর অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মাহেদি হাসান জুয়েল। পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসেন পারভেজ হোসাইন।
রোববার পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে এলাকার যুবদল, ছাত্রদল এমন প্রায় ৩০-৪০ জন মিটিংস্থলে এসে অভিযোগ করতে থাকে এই কমিটি বৈধ নয়। মিটিং করা যাবে না। এই বলেই তারা হামলা করতে থাকে। তবে এরা কার পক্ষে এসেছে তা বলেনি।
অপরদিকে বর্তমান কমিটির সভাপতি দাবিদার মাহেদি হাসান জুয়েল জানান, তাদের স্বাক্ষর জাল করে পারভেজ সাহেবকে সভাপতি করা হয়েছে। এটি বৈধ নয়। অপরদিকে আজ হামলা হয়েছে এটা সত্য। তবে কারা করেছে তা তিনি জানেন না। তবে আজ কোনো সভা বা মিটিং ছিল না, পারভেজ সাবেক একজনকে নিয়ে কলেজে যান। আর বলেন, আজই মিটিং করা হবে। এটা শুনে এলাকার শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ স্থানীয়রা চড়াও হন বলে শুনেছেন। বর্তমানে সভাপতি ও কমিটি নিয়ে আদালতে মামলা করেন সাবেক অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর আলম।