1. mohib.bsl@gmail.com : admin :
  2. info@barisalerkhobor.com : editor :
শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৫৮ অপরাহ্ন

ভুয়া বিল করে শিল্পকলার অর্থ আত্মসাৎ, কর্মকর্তার গোমর ফাঁস করলেন ফুলঘর মালিক

  • Update Time : শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১৮ Time View

বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কদিন আগে জেলা শিল্পকলা একাডেমি অনুমোদিত একটি বিলের ভাউচার নিয়ে বরিশাল নগরের সদর রোডের একটি ফুলের দোকানে গিয়ে দেখিয়ে জানতে চাওয়া হয়, এই বিল তারা করেছেন কিনা। ফুল দোকানের মালিক মো. ইভান সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দেন, ‘না না। আমরা এই বিল করিনি।’

এই বিলের ভাউচারে একটি ফুলের তোড়া বাবদ পাঁচ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে। ইভান বলেন, ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রায়ই আমার দোকান থেকে ফুলের তোড়া নেয়। যার বিল সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা। তবে ফুলের তোড়া নেওয়ার সময় শিল্পকলা একাডেমি বিলের খালি পাতা নেয়। আমার ধারণা, খালি পাতায় পাঁচ হাজার টাকা বসিয়ে দিয়েছেন শিল্পকলার কর্মকর্তারা। ফুলের তোড়ার বিল আমরা ৫০০ টাকাই করি।’

তাহলে কেন বিলের খালি পাতা দিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ইভান বলেন, ‘ক্রেতা ধরে রাখতে এইটুকু সুযোগ দিতে হয়। না হয় পরে তারা আর ফুল কিনতে আসবে না।’

একইভাবে এক হাজার ৮০০ টাকার আরেকটি বিল ভাউচারে ১৮ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে। এভাবে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে অসিত বরণ দাশগুপ্ত অর্থ আত্মসাৎ করছেন বলে জানা গেছে। জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার হিসেবে অসিত বরণ দাশগুপ্ত গত ১২ জানুয়ারি যোগ দেন। এরপর থেকে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। যা নিয়ে বরিশালের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সর্বশেষ রবীন্দ্র সংগীত সম্মেলনে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এক হাজার ৮০০ টাকা করে ২৬টি সংগঠনে ৪৬ হাজার ৮০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু কালচারাল কর্মকর্তা সেখানে ১৮ হাজার টাকা করে চার লাখ ৬৮ হাজার টাকার বিল করেন বলে নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক সংগঠক জানিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খাবার বাবদ অতিরিক্ত বিল করে টাকা আত্মসাৎ করছেন অভিযোগ রয়েছে।

গত ৩০ জুন জেলা কালচারাল কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত নোটিশে সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয় সাময়িক সময়ের জন্য এ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে কবে নাগাদ চালু হবে, সে বিষয়ে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি। এতে শিল্পকলা একাডেমিতে দায়িত্বরত প্রশিক্ষকরা ক্ষুব্ধ হন। তাদের দাবি, প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কালচারাল কর্মকর্তা হাসানুর রশীদ শিল্পকলায় নিযুক্ত ১২ জন প্রশিক্ষকের ২০২৪-২৫ সালের চুক্তিনামা নবায়ন করে যেতে পারেননি। তবে প্রশিক্ষকরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। নবায়নের জন্য কয়েক দফায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে গেছেন তারা। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা সুরাহা হয়নি। তাদের অভিযোগ, অসিত বরণ দাশগুপ্ত প্রশিক্ষক নিয়োগ নিয়েও দুর্নীতি করছেন।

ইতিমধ্যেই অসিত বরণ দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়মের তথ্য সংগ্রহ করে লিখিত অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। গত ১ জুলাই বরিশালের গণমাধ্যমকর্মী মুহম্মদ ইমন খন্দকার হৃদয় অভিযোগপত্রটি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ওয়ারেছ হোসেন, বরিশালের জেলা প্রশাসক ও শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন এবং দুদকের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. এইচএম আক্তারুজ্জামানের বরাবর দাখিল করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উপমা ফারিসা বলেন, ‘লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছুই জানি না। নতুন যোগ দিয়েছি। তবে আজ থেকে বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল কর্মকর্তার অভিযোগের বিষয় নিয়ে কাজ করবো।’

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২৪

Theme Customized By BreakingNews