1. mohib.bsl@gmail.com : admin :
  2. info@barisalerkhobor.com : editor :
শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:০১ অপরাহ্ন

বরিশালে বিএনপির মনোনয়ন যুদ্ধে সাবেক ১০ ছাত্রনেতা

  • Update Time : রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫
  • ২০ Time View

আন্দোলন সংগ্রামে কেটেছে ছাত্রজীবনের সোনালি সময়। ফ্যাসিস্টের হাত থেকে বাঁচতে বছরের পর বছর থেকেছেন আত্মগোপনে। হয়েছেন নির্যাতন আর জেল-জুলুমের শিকার। তবু থেকেছেন রাজপথে। দিয়েছেন স্বৈরাচারবিরোধী লড়াইয়ের নেতৃত্ব। এমনই পোড় খাওয়া ১০ সাবেক ছাত্রনেতা এবার চাইছেন মনোনয়ন। বরিশালের ৩ জেলার ৭টি আসনে ধানের শীষের কাণ্ডারি হতে চাইছেন এরা। কেবল যে চাওয়া তাই নয়, অতীতের ক্লিন ইমেজ আর সাংগঠনিক দক্ষতায় শক্ত অবস্থানও গড়েছেন যার যার নির্বাচনি এলাকায়। কখনোই এমপি-মন্ত্রী কিংবা নির্বাচিত কোনো পদে না থাকায় সাধারণের মধ্যেও এদের নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আগ্রহ।

লন্ডন বৈঠকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন করার ব্যাপারে মোটামুটি একটা ঐকমত্য হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও বিএনপির। অবশ্য এর বহু আগে থেকেই বরিশালের নির্বাচনি এলাকায় মাঠে নেমে গেছে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রার্থীরা। যাদের মধ্যে আছেন বেশ কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতা। কেবল কেন্দ্রীয় নয়, স্থানীয় পর্যায়ের অনেক ছাত্রনেতাও আছেন এই দৌড়ে। যাদের অনেকেই এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন মূল দলের। বরিশাল সদর আসনে মনোনয়ন চাইছেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, যুবদলের সাবেক মহানগর আহ্বায়ক, বর্তমানে বরিশাল জেলা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. আবুল কালাম শাহিন ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা নাসরিন। আরও কয়েকটি জেলায় মনোনয়নের লড়াইয়ে আছেন কয়েকজন সাবেক ছাত্রদল নেতা। এদের মধ্যে রয়েছেন পিরোজপুর সদর আসনে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বর্তমান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক আলমগীর হোসেন, পিরোজপুর-২ আসনে ভাণ্ডারিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি কিংবদন্তি সাংবাদিক তফাজ্জেল হোসেন মানিক মিয়ার ভাতিজা মাহমুদ হোসাইন এবং ঝালকাঠি-১ আসনে কোতোয়ালি থানা ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আজম সৈকত। তবে সবাইকে ছাপিয়ে আলোচনার শীর্ষে ছাত্রদলের প্রভাবশালী ১০ সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা। যারা এখন পালন করছেন বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে মনোনয়ন চাইছেন সাবেক ৩ ছাত্রনেতা। এরা হলেন-জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও বর্তমানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসম্পাদক রওনাকুল ইসলাম টিপু, ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি, বর্তমানে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য দুলাল হোসেন এবং ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল। দলীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি মনোনয়নের আশায় নিয়মিত এলাকায় যাতায়াত ও যোগাযোগ রাখছেন এরা। বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসনে মনোনয়নের লড়াইয়ে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জসিম উদ্দিন হল শাখার সাবেক ভিপি, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান। মুখে মনোনয়নের কথা না বললেও নির্বাচনি এলাকায় নিয়মিত যাতায়াতের সঙ্গে সঙ্গে বেশ বড় একটা সমর্থক বলয় তৈরি করেছেন তিনি। দুই উপজেলার শীর্ষস্থানীয় বহু নেতা রয়েছেন তার সঙ্গে।

ঝালকাঠি-২ (নলছিটি-ঝালকাঠি) আসনে দলীয় মনোনয়নের আশায় মাঠে আছেন বিএম কলেজের সাবেক ভিপি, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির ৩ বারের সাবেক সহসভাপতি, যুবদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য এবং বর্তমানে কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু। ফ্যাসিস্ট আমলে ‘হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ চাই’ বলে আলোচনায় আসা নান্নু বহু বছর ধরেই মনোনয়নের আশায় ছুটছেন এলাকায়। জনসমর্থনের বেশ শক্ত একটা বলয় রয়েছে তার। ভোলা সদর আসনে দলীয় মনোনয়নের লড়াইয়ে আছেন ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সম্পাদক ও বর্তমান সদস্য হায়দার আলী খান লেনিন। নিয়মিত এলাকায় যাতায়াতের মাধ্যমে অবস্থানের জানান দিচ্ছেন তিনি। ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনে সমর্থনের জোয়ার এখন ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি, যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়নের। মনোনয়ন চাইবেন এমন কোনো ঘোষণা না দিলেও নিয়মিত এলাকায় সমাবেশ গণসংযোগ করছেন তিনি। তার প্রতিটি কর্মসূচিতেই ব্যাপক জনসমাগম হয় সাগর পাড়ের ওই দুই উপজেলায়।

পটুয়াখালীর ৩টি আসনে ধানের শীষের কাণ্ডারি হতে চাইছেন ছাত্রদলের সাবেক ৩ নেতা। পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে মনোনয়নের লড়াইয়ে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের সাবেক ভিপি, বিএনপির বর্তমান জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন। পটুয়াখালী-৩ (বাউফল-দশমিনা) আসনে একমাত্র মনোনয়ন প্রার্থী হিসাবে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বর্তমান সদস্য হাসান মামুন। এখানে একদিকে যেমন তার বিরুদ্ধে নেই দলের আর কোনো মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থী, তেমনি পুরো নির্বাচনি এলাকায় দলীয় সমর্থনের একক নেতাও তিনি। একই পরিস্থিতি পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনে। এখানে একক মনোনয়ন প্রার্থী হিসাবে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ২ বারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম আহ্বায়ক, বর্তমানে বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ। নির্বাচনি এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যেও রয়েছে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা।

কুয়াকাটা পৌর যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মো. ফারুক বলেন, ছাত্রদলের নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপির পদ পর্যন্ত আসা মানে এদের ত্যাগ ও সাংগঠনিক দক্ষতা প্রশ্নাতীত। আন্দোলন-সংগ্রামের প্রতিটি পরীক্ষাতেও তারা উত্তীর্ণ।

পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি বলেন, যতদূর জানি এবার মনোনয়ন প্রশ্নে যেসব যোগ্যতার বিচার হবে তার অন্যতম সততা। যাদের কথা বলা হচ্ছে তাদের অতীত জীবন নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। প্রার্থী যদি হয় ক্লিন ইমেজের তাহলে ভোটারদের কাছে ভোট চাইতেও বিব্রত হতে হয় না।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, অভাব-অভিযোগের দেশ বাংলাদেশে যারা একবারের জন্যও এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে জনগণের অভিযোগ থাকা খুবই স্বাভাবিক। হয়তো তিনি কোনো দুর্নীতি করেননি। তারপরও কারও হয়তো একটা টিউবওয়েল না পাওয়ার দুঃখ থাকতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন কাউকে মনোনয়ন দিলে সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও আগ্রহ বাড়ে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বুঝেশুনেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন। আমরা তার সিদ্ধান্তেই সামাল দেব ভোটযুদ্ধের মাঠ।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২৪

Theme Customized By BreakingNews