1. mohib.bsl@gmail.com : Administrator : Administrator
  2. h.m.shahadat2010@gmail.com : Barisalerkhobor : Barisalerkhobor
শনিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৭ অপরাহ্ন

ঝালকাঠিতে সেতু যেন মরণফাঁদ: দুর্ভোগে ১০ হাজার মানুষ

  • আপডেটের সময় : শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৫ টাইম ভিউ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রাম ও রানাপাশা ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের খালের ওপর নির্মিত সেতুটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সেতুর মাঝখানে কয়েকটি স্থান ভেঙে পড়েছে। বিকল্প সড়ক না থাকায় ভাঙা সেতুতে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে দুই ইউনিয়নের মানুষ।

জানা গেছে, রাজাবাড়িয়া-ইসলামপুর সড়কে ১৯৯৬ সালে এলজিইডির অর্থায়নে ২০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুর পশ্চিম দিকে ইসলামপুর, হদুয়া দরবার শরিফ, রানাপাশা ইউনিয়ন পরিষদ ও রাজাপুর উপজেলা সদর।

অপর দিকে রাজাবাড়িয়া গ্রাম হয়ে মোল্লার হাট পুলিশ ফাঁড়ি ও ইউনিয়ন পরিষদ বাজার। দুই ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা সড়কটি ব্যবহার করে।

স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর ধরে সেতুর কয়েক স্থানে পাটাতন ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকলেও এলজিইডি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এটি সংস্কারে অথবা নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেননি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই সেতু পারাপার হচ্ছে মোটরসাইকেল, অটোরিকশাসহ ছোট যানবাহন।

স্থানীয়রা প্রতিবছর গ্রামবাসী থেকে চাঁদা তুলে সেতুর ভেঙে যাওয়া অংশে বাঁশ ও কাঠের পাটাতন তৈরি করে বাসিন্দাদের চলাচলের উপযোগী রাখেন। যে কোনো মুহূর্তে সেতুটি ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে।

এ ছাড়া ভারী যানবাহন চলাচল না করায় ফসল ও ব্যবসার পণ্য পরিবহন, অ্যাম্বুলেন্স সেবা ও বাসাবাড়ির নির্মাণসামগ্রী পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

গত সোমবার সরেজমিন দেখা গেছে, সেতুটির বেহাল দশা। সংস্কারের অভাবে বিভিন্ন জায়গায় পলেস্তারা খসে পড়ছে। সেতুর পাটাতনের অন্তত চারটি স্থানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। নড়বড়ে হয়ে পড়া সেতুতে কাঠের পাটাতন দিয়ে লোকজন চলাচল করছে।

তবে কাঠের পাটাতনের অবস্থাও নাজুক। বিকল্প সড়ক না থাকায় জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে অটোরিকশা, ইঞ্জিনচালিত ভ্যানগাড়ি ও মোটরবাইকে লোকজন ও স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পারাপার হচ্ছেন। সেতুর পাটাতন ধসে যে কোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে।

কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, প্রতিদিনই তারা ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে এই সেতু দিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। দ্রুত নতুন একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান তারা।

রাজাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল বারেক হোসেন জানান, এই সেতুর দুই পাড়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও স্নাতক স্তরের মাদ্রাসা রয়েছে।

প্রতিদিন ছেলেমেয়েরা ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায়। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় থাকেন। অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য শহরে নেওয়া খুবই কষ্টকর।

স্থানীয় অটোরিকশা চালক আব্দুল রাজ্জাক বলেন, কয়েক দিন আগে রাতে সেতু অতিক্রম করার সময় চাকা গর্তে পড়ে রিকশা উল্টে যায়। এতে তাঁর একটি পায়ের হাড় ভেঙে গেছে।

ইসালাবাদ গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, কিছুদিন আগে এই সেতু দিয়ে একটি টমটম গাড়ি পার হতে গিয়ে উল্টে যায়। এই সেতুটির বেহাল দশার কারণে দুই পাশের বাসিন্দারা কয়েক বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দ্রুত সেতুটি পুনর্নিমাণের দাবি জানান তিনি।

মোল্লারহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কে এম মাহবুবুর রহমান সেন্টু বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি ঝুঁকিপুর্ণ হওয়ার কারণে মোল্লারহাট ও রানাপাশা ইউনিয়নের জনসাধারণকে দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বর্তমান সরকারের আমলে তাঁর ইউপিতে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। এলজিইডির পক্ষ থেকে সেতুটি পুনর্নির্মাণে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি আশাবাদী।

নলছিটি উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. ইকবাল কবীর সেতুটির সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি এ বিষয়ে জেলা কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলেন।

ঝালকাঠি জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুল ইসলাম সরকার বলেন, জনদুর্ভোগ লাঘবে ওই সেতুটি নতুন করে নির্মাণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুতই সেতু নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

এই বিভাগের আরো খবর
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © বরিশালের খবর।
Theme Customized By BreakingNews