নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ঝালকাঠির রাজাপুরের রোলা মহিলা মাদরাসার ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রী হয়রানির শিকার হয়ে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এ ঘটনায় সংকটাপন্ন ওই ছাত্রী দুইদিন ধরে বরিশাল শেবাচিমে ভর্তি রয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছে এ ঘটনায় অভিযুক্ত রোলা দিঘিরপাড় এলাকার বাবুল হাওলাদারের ছেলে আরিফ হাওলাদার (২০)।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ না পেলেও পুলিশ ঘটনাস্থলসহ উভয়পক্ষের বাড়িতে গিয়ে পরির্দশন করে ঘটনা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছে।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা মোবাইল ফোনে অভিযোগ করে জানান, দীর্ঘদিন মাদরাসায় যাওয়া আসার পথে তার মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিলো ওই যুবক।

গত ৩০ আগস্ট দুপুর দেড়টার দিকে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে অভিযুক্ত আরিফ ও তার সহযোগী বারবাকপুর গ্রামের বাবুল মৃধার ছেলে রহিম মৃধা (২০) পথরোধ করে উত্ত্যক্ত করলে ওই ছাত্রী তার বাবাকে খবর দেয়।

পরে স্থানীয়দের নিয়ে মৃধাবাড়ি এলাকায় গিয়ে তার মেয়েকে উদ্ধার করেন এবং অভিযুক্তদের ধরে হাজিরহাট নিয়ে এলে স্থানীয় ইউপি সদস্যের পরামর্শে আর উত্ত্যক্ত করবে না এমন মুচলেকা দিলে গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আরিফকে তার দাদা সালামসহ স্বজনদের জিম্মায় দিয়ে দেন।

এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই ছাত্রীর পথরোধ করে ফের তাকে টানাহেঁচড়া করে মোবাইল নেওয়ার চেষ্টা চালায় এবং তাকে তুলে নিতে চায়।

খবর পেয়ে ওই ছাত্রীর বাবাসহ স্থানীয়রা গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসার কিছুক্ষণ পরে সে বমি করতে থাকে।

ওই ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হবে তাই লোকলজ্জার ভয়ে সে বিষপান করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে তাকে উদ্ধার করে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তারা বরিশাল শেবাচিমে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে সে অচেতন অবস্থায় রয়েছে বলেও জানায় ছাত্রীর বাবা।

এদিকে অভিযুক্ত আরিফ হাওলাদারের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মা নাসিমা বেগম দাবি করেন, ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার ছেলের যোগাযোগ ছিল এবং তারা দূর সম্পর্কের আত্মীয়।

তার ছেলেকে গত ৩০ আগস্ট দুপুরে আটকে স্থানীয়রা মারধর করায় যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। তার ছেলে চট্টগ্রামে জাহাজে চাকরি করে মঙ্গলবার সেখানে চলে গেছে।

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানান, বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই ছাত্রীর বা তার পরিবার এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।