মুহা. সফিক খান, নিজস্ব সংবাদদাতা।
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা উপজেলা প্রশাসনিক ভবনে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন ৬ টি সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর আগে ২০২১ সালে উপজেলা প্রশাসনের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ৬ কোটি ২২ লাখ টাকা বরাদ্দে নতুন ভবন নির্মাণ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় এলজিইডি প্রকৌশলী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান এর হস্তক্ষেপে আমের বাগান নিধন করে পরিকল্পনা ছাড়াই নতুন ভবন নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু জমি সংকটের কারণে ওই নতুন ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়। স্থান নির্ধারণ করে নতুন ভবনের কাজ শুরু করতে না পারায় ঐ ভবনটি নির্মাণ হয়নি। বর্তমানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুরাতন ভবনটিতে জীবনের ঝুকি নিয়েই অফিস করতে বাধ্য হচ্ছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সরেজমিন ১৭মে দেখা যায়, ছাদ ও দেওয়ালের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। সেই ফাটল দিয়ে একটু বৃষ্টি হলেই অফিস কক্ষগুলোর মধ্যে চলে আসে বৃষ্টির পানি। পলেস্তার খসে ও মরিচা পড়া রড বেরিয়ে আছে। বর্ষা মৌসুমে ছাদ চুইয়ে পানি আসার দাগ চোখে পড়ে। পলেস্তার খসে পড়ে কয়েকজন আহতও হয়েছেন। উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কার্যালয়, উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা এলজিডি প্রকৌশলী কার্যালয়, উপজেলা সমবায় কার্যালয়, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ছাদ থেকে পলেস্তার খসে মাথায় পড়ার ভয় নিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এমনকি এইসব প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ মাঝেমধ্যে পলেস্তার খসে পড়ে আহত হয়েছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, ২০২২ সালে অফিস চলাকালে ছাদ থেকে পলেস্তার খসে পড়ে চেয়ার ও টেবিল ভেঙে যায়। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ওই সময় কক্ষে না থাকায় বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি।
উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্র জানায়, ১৯৮২ সালে উপজেলার প্রশাসনিক এই ভবনটি নির্মিত হয়। ১৯৮২ সালের ৭ নভেম্বর তৎকালীন মন্ত্রী এজেএম ওবায়দুল্লাহ খান ভবনটি উদ্বোধন করেন। ৪১ বছর আগের তৈরি করা ভবনটি ২০২৩ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল জানান, উপজেলা প্রশাসনিক ঐ ভবনে সরকারি ৬ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পরিত্যক্ত এ ভবনটির অবস্থা খুবই খারাপ। এমনকি তার শৌচাগারও ব্যবহারের অনুপযোগী। বাধ্য হয়ে দূরে সরকারি অন্য অফিসগুলোতে গিয়ে শৌচাগার ব্যবহার করতে হয় তাদের। নতুন একটি ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও জমি নির্ধারণের জটিলতার কারণে কার্যাদেশ বাতিল হয়। এখন পরিত্যক্ত এই ভবনের স্থানে নতুন একটি ভবন নির্মাণের প্রচেষ্টা চলছে।