1. mohib.bsl@gmail.com : admin :
  2. h.m.shahadat2010@gmail.com : Barisalerkhobor : Barisalerkhobor
সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন

এটি হচ্ছে ‘প্যাকেজ নির্বাচন’

  • Update Time : শুক্রবার, ৫ মে, ২০২৩
  • ২৯ Time View

নির্বাচন কমিশন ৩ এপ্রিল পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর ১২ এপ্রিল প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ভোটের মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সিটি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা নিয়েই চলছে নগরীজুড়ে জোর আলোচনা।

আরিফ ২০ মে নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশ করে তার অবস্থান পরিষ্কার করবেন বলে জানিয়েছেন। এর আগে যুগান্তরের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। ২১ জুন অনুষ্ঠেয় সিলেট সিটি নির্বাচনের পরিবেশ, তার অবস্থান ও দলের অবস্থান নিয়ে কথা বলেছেন আরিফ।

যুগান্তর : নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে এখনো মুখ খুলছেন না কেন?

আরিফুল হক চৌধুরী : দেখুন, মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে এই সরকার। এ নিয়ে আমার দল বিএনপি মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আন্দোলন করে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে সিটি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে রয়েছে বিএনপি। সরকার সিটি করপোরেশনে একটি প্রহসনের নির্বাচন করতে চাচ্ছে, এই ফাঁদে পা দেওয়ার আগে অনেক ভাবনা-চিন্তার প্রয়োজন আছে।

যুগান্তর : প্রহসনের নির্বাচন বলতে কী বোঝাতে চাচ্ছেন, কিভাবে আগেভাগেই তা বলছেন?

আরিফুল হক চৌধুরী : শুধু প্রহসন নয়, এটি একটি প্যাকেজ নির্বাচন হচ্ছে। প্যাকেজের প্রার্থী হচ্ছেন সরকারি দলের প্রার্থী। যে করেই হোক তাকে জয়ী করতে হবে। আমার দল বিএনপি যে বিষয়গুলো এতদিন ধরে বলে আসছে তা আবারও সত্যি প্রমাণিত হচ্ছে। সিটি নির্বাচন শুরু করার আগেই নির্বাচন কমিশন যে কতটুকু নিরপেক্ষ তা এখানেই স্পষ্ট হচ্ছে। যেখানে তফশিল ঘোষণার পর কোনো রদবদল হলে কমিশনের করার কথা। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে প্রশাসনিক, পুলিশ, নির্বাচনি অফিসারসহ অনেক রদবদল হচ্ছে। বিভিন্ন বৈঠক হচ্ছে।

পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা ও সরকারি কর্মকর্তারা এসে একের পর এক বৈঠক করছেন। এগুলো তো জনগণের চোখে পড়ছে। রাষ্ট্র, প্রশাসনযন্ত্র আর রাজনীতি আলাদা আলাদা জিনিস। রাষ্ট্রযন্ত্র যখন ব্যবহার হয় কোনো ব্যক্তি বিশেষকে কেন্দ্র করে এবং তার কথার প্রতিফলন ঘটে, তখন আর জাস্টিস থাকে না। নির্বাচনের আগেই নির্বাচন কমিশন চোখ বন্ধ করে ফেলেছে। তাই তাদের ওপর ভরসা করা যে ঠিক হবে না তা বিএনপি আগেই বুঝেছে। এখন তা পরিষ্কার হচ্ছে।

যুগান্তর : আপনি কি প্রশাসনে রদবদল কিংবা নানা বৈঠকের খবরে ভয় পাচ্ছেন?

আরিফুল হক চৌধুরী : আমি এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পাই না। এই নগরবাসীর সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছি। প্রার্থী হই বা না হই নগরবাসীর অধিকার আদায়ে নিজের জীবন দিতেও প্রস্তুত রয়েছি।

যুগান্তর : ভোট তো ইভিএমে হবে, সেখানে কারচুপি হওয়ার কি সুযোগ আছে?

আরিফুল হক চৌধুরী : দেখুন দেশের মানুষ ইভিএমে বিশ্বাস করে না বলেই জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। কারণ ইভিএম হচ্ছে এই সরকারের কারচুপির মেশিন। ভোটাররা মনে করেন, তারা যে প্রতীকেই ভোট দেন তা সরকারি দলের প্রতীকে চলে যাবে। সেই সুযোগও ইভিএমে তৈরি করে রাখা আছে। সরকার যেহেতু একটি পাতানো সিটি নির্বাচন করতে চায় তাই নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে সিটি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে।

দেশের গণমাধ্যম এবং সারা দুনিয়া বলছে, দিনের ভোট রাতে হয়ে গেছে। ইভিএম আরও নিয়ন্ত্রিত। এটার পাসওয়ার্ডসহ সবকিছু থাকবে তাদের কাছে। সিলেটের মানুষ এটার সঙ্গে পরিচিত নয়। এই নগরের মানুষ এখনো এত স্মার্ট হননি। আর নতুন বর্ধিত এলাকার মানুষ তো একেবারে গ্রামের মানুষ। তারা ইভিএমে অভ্যস্ত নন। কোনটা টিপ দিলে কোনটায় যাবে সেটা বুঝবেই না। তাই ইভিএমে কোনো ভোট মানি না।

যুগান্তর : নির্বাচনে প্রার্থীই যদি না হন তবে ইভিএম বাতিল চাইছেন কেন?

আরিফুল হক চৌধুরী : এই নগরীতে দীর্ঘদিন রাজনীতি করছি, নগরীর মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছি। নগরবাসী আমাকে ভালোবাসেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে মুরুব্বিরা, যুবকরা আমি যাতে প্রার্থী হই সেই প্রত্যাশা করে বসে আছেন। রীতিমতো চাপ দিচ্ছেন। ২০ মে রেজিস্ট্রারি মাঠে নগরবাসীকে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। সেখানে নির্বাচনের পরিবেশ, ইভিএমের মাধ্যমে কী হতে পারে তার সুস্পষ্ট ধারণা নগরবাসীকে দিতে চাই। তারপর নগরবাসী সিদ্ধান্ত নেবেন এসব কিছু তারা মোকাবিলা করতে পারবেন কিনা? তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায়

তারা ইভিএম মানবেন কিনা এটা তাদের সিদ্ধান্ত। আমি মনে করি আন্দোলন ছাড়া অধিকার আদায় হয় না। প্রার্থী হওয়া না হওয়ার বিষয়ে সেদিনই আমার সিদ্ধান্ত পরিষ্কার করব।

যুগান্তর : আপনি কি দলের সিদ্ধান্ত আর নগরবাসীর চাওয়া এই দুই বিষয়ে দোটানায় পড়েছেন?

আরিফুল হক চৌধুরী : সব সময় আমি নগরবাসীকে সর্বোচ্চ সম্মান করি। আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করি। দল আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। আর বিএনপির রাজনীতি জনগণের কল্যাণের জন্য। গত নির্বাচনে আমার দল ম্যান্ডেট দিয়েছে কিন্তু নগরবাসী আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। ভোট না দিলে মেয়র হতে পারতাম না। দুটি বিষয়ই মাথায় রেখে আমি আমার সিদ্ধান্ত নগরবাসীর সামনে পরিষ্কার করব।

যুগান্তর : যদিও আপনি এখনো প্রার্থিতার ঘোষণা দেননি, ইতোমধ্যেই আপনার বিগত ১০ বছরের উন্নয়ন নিয়ে সমালোচনা করছে আওয়ামী লীগ। কসমেটিক উন্নয়ন কিংবা অপরিকল্পিত উন্নয়নের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আপনি কী বলবেন?

আরিফুল হক চৌধুরী : আপনারা জানেন, প্রথম মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর ২৮ মাস আমাকে সরকারি হেফাজতে রাখে। দুই মেয়াদের বাকি সময়ে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে তা নগরবাসীর চোখের সামনেই হয়েছে। প্রকল্প পাশের আগে নানাভাবে যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন ধাপে পাশ হয়ে অর্থ ছাড় হয়। অপরিকল্পিত প্রকল্প হলে তো সেখানেই বাতিল হতো। স্থানীয় সরকার ৪ বার কার্য সম্পাদনের জন্য সিলেট সিটি করপোরেশনকে সেরা পুরস্কার দিত না। সবশেষ সিলেট সফরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আমার কাজের প্রশংসা করেছেন। তাদের অভিযোগ সত্য হলে এসব প্রাপ্তি কেন?

যুগান্তর : প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসার পর আপনার দল ও সরকারি দলের স্থানীয় নেতারা মনে করেন আপনার সঙ্গে সরকারের গোপন সম্পর্ক আছে, এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী বলবেন?

আরিফুল হক চৌধুরী : দেখুন একজন জনপ্রতিনিধি যখন শপথ নেন তখন তিনি সরকারের একটি অংশ হয়েই কাজ করেন। স্থানীয় উন্নয়নের স্বার্থে সরকারের পক্ষ থেকে সিলেটের এমপি-মন্ত্রীরা এখনো কোনো অসহযোগিতা করেননি। নির্বাচিত হওয়ার পর আমি দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখিনি। মেয়র হিসাবে নগরের সবাইকে একইরকম মূল্যায়ন করি, করব। সরকার কিংবা সরকারি দলের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক থাকলে তো এই নির্বাচনে আমাকেই নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিত। এসব কথা রাজনীতির স্বার্থে কেউ কেউ বলে বেড়ায়। গুরুত্ব দেই না।

তিন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীসহ ১৮৪ জনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ : সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৩টিসহ ১৮৪টি মনোনয়ন সংগ্রহ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত এসব মনোনয়নপত্র কিনেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এর মধ্যে মেয়র পদে মনোনয়ন সংগ্রহকারী তিনজনই স্বতন্ত্র।

সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪০ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর পদে ৪১ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। মেয়র পদে মনোনয়ন সংগ্রহকারী হলেন-মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খান ও সামছুন নুর তালুকদার। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের মিডিয়া সেল (সিটি নির্বাচন) কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন।

 

 
 
 
 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ

Categories

© All rights reserved © 2023
Theme Customized By BreakingNews
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com