মুহা. সফিক খান, মির্জাগঞ্জ থেকে।।
নদী একূল ভাঙে, ওকূল গড়ে; এ তার নিষ্ঠুর খেলা। আগুনে পুড়লে মাটি ও ছাইচাপা স্বপ্ন থাকে; কিন্তু নদী ভাঙলে এক বুক নিঃশ্বাস ছাড়া আর কিছুই থাকে না। বর্তমানে এমনই ভয়াবহ নদী ভাঙনের কবলে পড়ে পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার ২ নং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের পিঁপড়াখালী, ভিকাখালী ও সুন্দ্রা কালিকাপড় গ্রামের মানুষ এখন দিশেহারা। নদীগর্ভে একের পর এক বিলীন হয়ে যাচ্ছে তাদের বসতঘর, অট্টালিকা, হাট-বাজার, মসজিদ-মাদ্রাসা, সড়ক, ব্রিজ, ফসলি জমি, গাছপালাসহ সবকিছু। পায়রা নদীর ভয়াবহ ক্ষুধা যেন কিছুতেই মিটছে না। পায়রার ভাঙন এখন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেরিবাঁধে বিশাল আকারের ফাটল ধরেছে। আতঙ্কিত রয়েছে উপকূলবাসী।
রোববার (১০ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা গেছে, পায়রা নদীর বেরিবাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধের কিছু অংশে অবশিষ্ট রয়েছে। প্রতি জোয়ারেই ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা শত শত পরিবার। বসতভিটা ও ফসলি জমি, নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে দ্রুত টেকসই বেরি বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিকল্পিত আর টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করায় প্রতিনিয়ত ভাঙনের মুখে পড়তে হয়। এজন্য তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন।
স্থানীয় কৃষক আবুল বাসার তালুকদার বলেন, যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। এর আগেও কয়েকবার বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে গ্রামে লোনা পানি ঢুকলে সব ধরণের ফসল ও গাছ মারা যায়। ঘর-বাড়ি ভেঙে পড়ে। তখন গরু-ছাগল, পশু-পাখি নিয়ে বিপদে পড়তে হয়। বাঁধ ঠিক হলে আবার ঘর ঠিক করে বসবাস করতে হয়। একটু গুছিয়ে উঠতেই দেখা যায় আবার বাঁধ ভেঙে সব শেষ হয়ে গেছে।
স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা বলেন, পায়রা নদীর স্রোতে আবারও বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এই ভাঙ্গনের কবলে পড়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই এলাকার মানুষ। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকলে নিশান এই ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক গ্রাম ডুবে যাবে।
সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্তৃপক্ষ বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।