জিয়াউল হকঃ
জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামেই ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়েছে সরিষার। তবে উপজেলার চরামদ্দি,চরাদী,ফরিদপুর,দুর্গাপাশা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি সরিষার আবাদ করেছে স্থানীয় কৃষকরা।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠে মাঠে সরিষা ফুলের চাদর। মাঠের পর মাঠ ছেয়ে গেছে হলুদ সরিষা ফুলের চাদরে। ফুলে ফুলে গুঞ্জন তুলছে মৌমাছিরা। রোদের ঝলমল আলোতে হলুদের আভায় এমন সৌন্দর্য দেখতে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। যেদিকে যায় দুচোখ ফুলে ফুলে ছেয়ে আছে মাঠের পর মাঠ।
এবছর যদি অনুকূল আবহাওয়া থাকে তাহলে সরিষার ফলন বিগত বছরগুলোর চেয়ে দ্বিগুণ হবে। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, তারা সরিষা ঘরে তুলেই ধান চাষের জন্য জমি তৈরি করতে শুরু করবেন। এখন এসব এলাকার চাষিরা সরিষার পরিচর্যা নিয়ে ব্যাপক সময় পার করছেন। জমি থেকে পাকা সরিষা সংগ্রহ করতে পারলেই কৃষকদের চিন্তা দূর হবে।
চলতি মৌসুমে পুরো উপজেলায় প্রায় ৫ শত ৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে সরিষার। আবহাওয়া অনুকূলে তারপরও দুঃচিন্তায় প্রহর গুনে দিন কাটাচ্ছে কৃষকরা।
গত মৌসুমের তুলনায় এবার অনেক বেশি সরিষার আবাদ হচ্ছে বাকেরগঞ্জ উপজেলা জুড়ে। কৃষকের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন জাতের সরিষার আবাদ হলেও টরি ৭, বারি ১৪, বীনা ৯ সহ কয়েক জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
চরামদ্দি ইউনিয়নের সরিষা চাষী আব্দুল বারেক জানান, জমি তৈরি করা থেকে ফলন ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় ৩ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে এসব জমি থেকে প্রায় ৮/১০ মণ সরিষার ফলন পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।
তবে এবার বাজারদর বেশি পাওয়ার আশা করছেন অনেকেই। একাধিক কৃষক জানান, এই বছর তৈলের দাম অনেক বেশি হওয়ায় স্থানীয় কৃষকেরা সরিষার আবাদ করেছেন বিগত বছরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি। অন্যান্য ফসলের মতো সরিষা আবাদে তেমন শ্রমের প্রয়োজন হয় না। জমি থেকে পাকা সরিষা সংগ্রহ ও মাড়াই করে ফসল ঘরে তোলার জন্য পরিবারে পুরুষের পাশাপাশি নারী, বৃদ্ধ ও শিশু সদস্যরাও নিয়মিতভাবে কাজ করেন।
উপজেলার চরাদী ইউনিয়নের কৃষক আবুল হাওলাদার বলেন , অল্প খরচ ও স্বল্প সময়ে সরিষার ফলন ঘরে তোলা যায়। ঝড় বৃষ্টি না হওয়ায় চলতি মৌসুমে সরিষার ফলনও হয়েছে বেশ। সরিষার বর্তমান বাজারদর ভালোই রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, রোদে শুকিয়ে গুদামজাত করে পরে বিক্রি করতে পারলে সরিষার বাজারদর আরও বেশি পাওয়া যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কিন্তু অভাবের তাড়নায় ফসল তুলার পরই বিক্রি করে দিতে হয় অধিকাংশ কৃষকদের।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুনীতি কুমার সাহা,
বলেন, চলতি বছরে বাকেরগঞ্জ প্রায় ৫ শত ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে পুরো উপজেলায়। বিঘা প্রতি মাত্র তিন চার হাজার টাকা খরচ করে প্রায় ৪/৫ মণ করে সরিষার ফলন পাবেন চাষিরা। অল্প খরচে বেশ লাভবান হয়ে থাকবেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সরিষা চাষিরা।
আমরা সরিষার চাষীদের সবসময় খোঁজ খবর নিয়েছি। তাদেরকে পরামর্শ দিয়ে আসছি।