তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ক্লুবিহীন জহিরুল ইসলাম খুনের ঘটনায় জড়িত বোন নুরুননেহার (৪৫) ও বেয়াই জলিলকে (৪৮) পুলিশ গ্রেফতার করেছে। টাকার জন্য জহিরুলকে বিষ খাইয়ে ঘেরে ফেলে দেন বোন ও বেয়াই জলিল।
রোববার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। সোমবার পুলিশ তাদের জবানবন্দির জন্য আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৮ জানুয়ারি উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের মো. জহিরুল ইসলাম ১৭ হাজার টাকা নিয়ে আমতলী শহরের যান। ওখানে প্রবাসী স্ত্রী নিলুফার পাঠানো টাকা ব্যাংক থেকে তুলে গরু কিনতে গরুর বাজারে যান জহিরুল। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। চার দিনেও তার হদিস পায়নি পরিবার। গত ২৩ জানুয়ারি জহিরুলকে আমতলী সদর ইউনিয়নের মানিকঝুড়ি একটি ঘেরের পাড়ে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওই হাসপাতাল ভর্তির পরের দিন অর্থাৎ ২৪ জানুয়ারি তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত জহিরুলের স্ত্রী নিলুফা বেগম বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার অজ্ঞাত আসামি দিয়ে আমতলী থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তে কাজ শুরু করেন। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত জলিল নামের একজনকে পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার পাতাবুনিয়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে।
পরে তার দেওয়া তথ্যমতে জহিরুলের বোন নুরুননেহারকে তার বাড়ি গুলিশাখালী থেকে রোববার রাতে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, জহিরুল বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরপরই তার পিছু নেয় বোন নুরুননেহার ও তার ভগিনীপতি মো. সামসুল হক। পরে তারা জহিরুলকে ধরে রাঙ্গাবালী উপজেলার পাতাবুনিয়া গ্রামে জলিলের বাড়িতে আটকে রাখেন। পরে জহিরুলকে বিষাক্ত দ্রব্য খাইয়ে আমতলীর মানিকঝুড়ি নামক স্থানে একটি ঘেরের পাশে ফেলে রাখেন।
এ ঘটনায় গ্রেফতার বোন নুরুননেহার ও বেয়াই জলিলকে সোমবার আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দির জন্য পাঠানো হয়েছে।
নিহত জহিরুলের স্ত্রী নিলুফা বেগম স্বামীর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি করেন।
আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় দ্রুত ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে দুই আসামি গ্রেফতার করেছি। গরু কিনতে নিয়ে যাওয়া টাকার জন্য জহিরুলকে হত্যা করে গ্রেফতার বোন নুরুননেহার ও বেয়াই জলিল। এ ঘটনার সঙ্গে আরও জড়িতদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হব।
আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, দুই আসামিকে জবানবন্দির জন্য আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।