শেখ মুহাম্মাদ আবু জাফর
ভারতীয় উপমহাদেশের অবিস্মরণী এক বরেন্য রাজনীতিক নবাব স্যার সলিমুল্লাহ। ১৮৭১ সালের ৭ জুন ঢাকার বিখ্যাত নবাব পরিবারে তাঁর জন্ম। ব্রিটিশ ভারতের অধিকারবঞ্চিত মুসলমানদের জন্য নবাব সলিমুল্লাহর সবচেয়ে বড় অবদান ‘নিখিল ভারত মুসলম লীগ’ প্রতিষ্ঠা। শত শত বছরের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক শোষণের শিকার ভারতীয় মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করেছে নবাব খাজা সলিমুল্লাহর মুসলিম লীগ। ১৯০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকার শাহবাগের বাগানবাড়িতে গঠিত হওয়ার পর থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এই দলের পতাকা নিয়ে মুসলিম স্বার্থ রক্ষায় রাজনীতি করেছেন : মহামান্য আগাখান (১৮৭৭-১৯৫৭), তৎকালীন কংগ্রেস নেতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ (১৮৭৬-১৯৪৮), নবাবজাদা লিয়াকত আলী খান (১৮৯৫-১৯৫১), শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক (১৮৭৩-১৯৬২), হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (১৮৯২-১৯৬৩), খাজা নাজিমউদ্দীন (১৮৯৪-১৯৬৪), মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী (রহ.) (১৮৮০-১৯৭৬), বর্তমান বাংলাদেশের স্থপতি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (১৯২০-১৯৭৫), পন্ডিত আবুল হাশিম (১৯০৫-১৯৭৪), ফজলুল কাদের চৌধুরী (১৯১৯-১৯৭৩), খান এ সবুর (১৯০৮-১৯৮২), আব্দুর রহমান বিশ্বাস (১৯২৬-২০১৭), উকিল শেখ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ্ (১৯২০-১৯৮৩) ব্যারিস্টার আবদুর রসুল (১৮৭২-১৯১৭) প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। জাতীয় নেতৃবৃন্দ সহ লাখো জনতার কণ্ঠে সে সময়ে ধ্বনিত হতো ” হাত মে বিড়ি মুহ মে পান, লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান “। উত্তাল হতো রাজপথ।
উপমহাদেশে মুসলিম রাজনীতিবিদ সৃষ্টির পেছনে রয়েছে নবাব সলিমুল্লাহ ও তার গঠিত মুসলিম লীগের ঐতিহাসিক অবদান। ১৯০২ সালে ব্রিটিশ সরকার নবাব সলিমুল্লাহকে ‘কমান্ডার অব দ্য স্টার অব ইন্ডিয়া (সিএসআই) উপাধি দেয়। ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি দিল্লির দরবার হলে নবাব সপ্তম অ্যাডওয়ার্ডের মুকুট পরিধানের রাজকীয় অনুষ্ঠানে সলিমুল্লাহকে ‘নবাব বাহাদুর’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।
আজ ১৬ জানুয়ারি এই মহান ব্যক্তির ১০৬ তম মৃত্যু বার্ষিকীতে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।