ভোলার মেঘনায় ডিজেলবাহী কার্গো অর্ধ নিমজ্জিত হয়ে ভেসে গেছে অন্তত ১১ লাখ লিটার ডিজেল ও অকটেন। এসব ডিজেল মিশে গেছে পানিতে।
এতে পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। মেঘনা থেকে দ্রুত তেল অপসারণ করা না হলে মাছের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে ডিজেলের দুর্গন্ধে মাছ শিকারে যেতে পারছেন না জেলেরা। কার্গো উদ্ধারে দেরি হওয়ায় সেটি ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, সাড়ে ১১ লাখ লিটার ডিজেল নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা এমভি সাগর নন্দিনী-২ নামের একটি কার্গো যাচ্ছিল চাদঁপুরের উদ্দেশে। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে সেটি নোঙর করা অপর একটি কার্গোর সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে তলা ফেটে বেরিয়ে যায় তেল। মুহূর্তের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ে মেঘনায়। দ্রুত তেল নদীর পানিতে মিশে যাওয়ায় পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পরিবেশবিদ অ্যাডভোকেট নজরুল হক অনু বলেন, তেল দ্রুত অপসারণ করা না হলে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে যারা এ পানি ব্যবহার করছে এবং মাছের উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে।
দুর্ঘটনাকবলিত কার্গো সাগর নন্দিনী-২ এর মাস্টার মাসুদুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার দিন শুধু এক থেকে দেড় হাজার লিটার তেল উদ্ধার হলেও বাকি সব তেল পানিতে ভেসে গেছে। এতে প্রায় ১২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর ডুবুরি ইমাম হোসেন বলেন, কার্গোটি বর্তমানে পানির ৫৫ ফুট নিচে রয়েছে। এটি ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত উদ্ধার করা না হলে পুরোপুরি তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কার্গোর মাস্টার আরও বলেন, এটি উদ্ধারের চেষ্টা করছেন তারা। ইতোমধ্যে সাগর বধু-৩ নামের একটি জাহাজ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে। আরেকটি বিকেলের মধ্যে এসে পৌঁছাবে।
উদ্ধারকারী জাহাজের ধারণক্ষমতা না থাকায় উদ্ধার অভিযান নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। কবে নাগাদ কার্গোটি পুরোপুরি উদ্ধার হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ।
কার্গো উদ্ধারে সক্ষমতা নেই জানিয়ে বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ম পরিচালক মো. আব্দুস সালাম বলেন, আমরা কার্গোটির মালিকপক্ষকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে উদ্ধার করতে বলেছি, কারণ এটির ওজন বেশি থাকায় উদ্ধারকারী জাহাজের সক্ষমতা নেই। তেলের কারণে পানিতে কিছুটা প্রভাব তো পরছেই।
এদিকে দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি। তবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন এবং পদ্মা ওয়েল কোম্পানির পক্ষ থেকে আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী চার কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
ভোলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তামিম আল ইয়ামিন বলেন, আমরা এখনও তদন্ত কমিটি গঠন করিনি তবে করা হবে। কার্গোটি উদ্ধার এবং নিরাপত্তায় ২য় দিনের মতো কাজ করছে কোস্টগার্ড ও বিআইডব্লিউটিএ।