1. mohib.bsl@gmail.com : admin :
  2. h.m.shahadat2010@gmail.com : Barisalerkhobor : Barisalerkhobor
সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৪:৪৬ অপরাহ্ন

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে বাউফলে অর্ধশতাধিক ঘর বিধ্বস্ত

  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২২
  • ৪৪ Time View

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কমপক্ষে অর্ধশোধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এক সহাস্রাধিক গাছ উপড়ে পড়েছে। গত রোববার দিবাগত ভোর রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল পৌনে চারটা পর্যন্ত গোটা উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পানির তোড়ে চরাঞ্চলের মাটি ও পাকা সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে ভেসে গেছে তিন শতাধিক পুকুর ও মাছের ঘেরের মাছ।

মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে সরেজমিনে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধানদী গ্রামে দেখা গেছে,মো. হানিফের ঘরের ওপর বিশাল আকৃতির দুটি গাছ পড়ে ধুমরে মুচড়ে গেছে। এ ঘটনায় হানিফের বিধবা মা ও স্ত্রী নির্বাক হয়ে গেছেন। হানিফ ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করেন।

স্থানীয় মো. আলম সওদাগর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,‘খুবই দরিদ্র পরিবার। হানিফ অনেক কষ্ট করে ঘরটি উঠিয়েছিলেন। তাঁর পক্ষে ফের ঘর উঠানো কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।

একই গ্রামের আলম ফরাজি, লুৎফর মুন্সির বসত ঘরের ওপর গাছ পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ঝড়ো বাতাসের প্রভাবে ধানদী ও নিমদী গ্রামের অন্তত ১০ টি ঘর ভেঙে গেছে। ছোট ডালিমা গ্রামের সেকান্দার বয়াতির বসত ঘরের ওপর গাছ পড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। পানির তোড়ে বাউফল পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের অটোচালক মো. হারুনের ঘরের ভিটে মাটি ও যাতায়াতের সড়কের মাটি চলে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘরের ওপর গাছ পড়ে নদী বেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের রায় সাহেব গ্রামের শাহআলম রাঢ়ী, আইয়ুব আলী সিকদার, ফজলে করিম খানের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।

একই ইউনিয়নের চরওয়াডেল গ্রামের মো. জসিম চৌকিদারের ঘরের ভিটে মাটি পানির তোড়ে ভেসে গেছে। ঘরটিও বিধ্বস্ত হয়েছে। একই গ্রামের মোসা. ফারজানা বেগমের বসত ঘরটি উড়িয়ে নিয়ে গেছে। ভিটে ছাড়া কিছুই নাই।

চর ব্যারেট গ্রামের মো. হেলাল হাওলাদারের বসত ঘরের ওপর গাছ পড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। দক্ষিণ চর ওয়াডেল গ্রামের মো. জুলহাস চৌকিদার, একই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের জুলহাস চৌকিদার ও ৫ নং ওয়ার্ডের ইব্রাহিম ফরাজির ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।

চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এনামুল হক ওরফে আলকাচ মোল্লা বলেন,‘ঝড়ো বাতাসে গাছ পড়ে ও পানির তোড়ে তাঁর ইউনিয়নে ৩০-৪০ টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অস্বাভাবিক পানিতে দুই শতাধিক পুকুর ও মাছের ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এছাড়াও চরওয়াডেল খানকা এলাকার পাকা সড়ক এবং চররায় সাহেব, চরব্যারেট ও চরনিমদী এলাকার মাটির সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলার কাছিপাড়া, ধূলিয়া, কেশবপুর, কালাইয়া, নাজিরপুর, আদাবাড়িয়া, নওমালাসহ বিভিন্ন এলাকায় এক সহাস্রাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ উপড়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে গত রোববার দিবাগত রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল চারটা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। যদিও বিকেল পৌনে চারটার দিকে উপজেলা সদরে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়েছে। বিদ্যুতের বাউফল জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে,অসংখ্য বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন,‘বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের ১৬ টি খুটি ভেঙে গেছে। এছাড়াও বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের ১০ টি অংশের ষ্টিলের পাত ভেঙে গেছে ও ঝড়ো বাতাসের প্রভাবে ৮০ জন গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

লাইনম্যানেরা বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ঠিক করার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। পৌনে চারটার দিকে উপজেলা সদরে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে। আশা করছি খুব কম সময়ের মধ্যে মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। তখন সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল-আমিন বলেন,‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ
© All rights reserved © 2023
Theme Customized By BreakingNews
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com